Home বাংলাদেশ লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে ডেকে…

লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে ডেকে…

955
0
SHARE

রাজধানীর ডেমরায় দুই শিশু নুসরাত জাহান ও ফারিয়া আক্তার দোলাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করেছেন দুই যুবক। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর দুই যুবক গোলাম মোস্তফা ও আজিজুল বাওয়ানী তাদের কাছে এ তথ্য দেন। দুই যুবক জানান, লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে শিশু দুটিকে ফ্ল্যাটে নিয়ে তাঁরা ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুদের চিৎকারের শব্দ চাপা দিতে সাউন্ড বক্সে জোরে গান ছেড়ে দেন। ধর্ষণ করতে না পেরে শ্বাসরোধে তাদের হত্যা করেন তাঁরা।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে গ্রেপ্তার করা যুবকদের দেওয়া তথ্যের কথা উল্লেখ করে এ কথা জানান পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

গত সোমবার রাত নয়টার দিকে ডেমরার কোনাপাড়ায় হজরত শাহজালাল সড়কে একটি ফ্ল্যাট থেকে সাড়ে চার বছর বয়সী নুসরাত জাহান ও পাঁচ বছরের ফারিয়া আক্তার দোলার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সড়কে পাশাপাশি বাড়িতে থাকে শিশু দুটির পরিবার। প্রতিদিন খেলতে বের হতো এই দুই শিশু। খেলতে থাকা শিশু দুটিকে লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে ফ্ল্যাটে নিয়ে নিয়ে যান মোস্তফা।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গোলাম মোস্তফাকে যাত্রাবাড়ীর ভাঙ্গা প্রেস এলাকা থেকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে ডেমরা থানা-পুলিশ। মোস্তফার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজিজুলকে ডেমরার কাউন্সিলের মোল্লা ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের কাছ থেকে গামছা, শিশুদের দুই জোড়া স্যান্ডেল, সাউন্ডবক্স ও লিপস্টিক উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, আজিজুল বাওয়ানী সম্পর্কে মোস্তফার মামাতো ভাই। তাঁরা দুজন মিলে দুই শিশুকে ধর্ষণের ফন্দি আঁটেন। ঘরে নেওয়ার পর প্রথমে নুসরাত ও দোলাকে তাঁরা সাজিয়ে দেন। এর পর মোস্তফা ও আজিজুল মিলে ইয়াবা সেবন করে দুই শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। দুই শিশু যখন চিৎকার করছিল, তখন মোস্তফা ও আজিজুল সাউন্ডবক্সে উচ্চ স্বরে গান চালিয়ে দেন। একপর্যায়ে দোলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন আজিজুল। এরপর নুসরাতকে গামছার ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন মোস্তফা।

শিশু দুটির বাসার পাশেই গোলাম মোস্তফার ফ্ল্যাট। সেখানে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। মোস্তফা পেশায় পোশাকশ্রমিক।

সোমবার দুপুর থেকেই এই দুই শিশু নিখোঁজ ছিল। নিহত দোলার চাচা রাশেদুল ইসলামের ভাষ্য, দুপুরের পর থেকে শিশু দুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজি শেষে তাদের না পেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। যখন মাইকিং করা হচ্ছিল, তখন এলাকার এক যুবক তাঁদের জানান, মোস্তফা নামের এক ব্যক্তিকে দুপুরের পর শিশু দুটিকে ডেকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি। ওই যুবকের কাছ থেকে এ কথা জানতে পেরে মোস্তফার খালা সেই ফ্ল্যাটে যান। সেখানে তিনি শিশু দুটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় মোস্তফা যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন, সে জন্য তিনি (খালা) বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। তবে লোকজন এসে মোস্তফাকে ঘরে পাননি।

নিহত শিশু ফারিয়া আক্তার দোলার বাবা ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন শিশু দুটিকে হত্যা করা হলো, এর কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। মোস্তফার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। নিহত আরেক শিশু নুসরাতের পরিবারের সঙ্গেও আমাদের কোনো আলাপ ছিল না।